আইসোটোপ এবং এর ব্যবহার (Isotopes and Their uses)

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - পদার্থ বিজ্ঞান জীবন বাঁচাতে পদার্থবিজ্ঞান(Physics to Save Lives) | - | NCTB BOOK
347
347

 তোমরা জানো একটি মৌলিক পদার্থের নিউক্লিয়াস নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন হলে তাকে সেই মৌলিক পদার্থের আইসোটোপ বলে। প্রকৃতিতে অনেক মৌলের বিভিন্ন আইসোটোপকে স্যাভাবিকভাবে তেজস্ক্রির হিসেবে পাওয়া যায় আবার নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া করে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বানানো সম্ভব। চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই এই তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়। এই আইসোটোপগুলো রোগ নির্ণয় করার জন্য যেরকম ব্যবহার করা যায় ঠিক সেরকম রোগ নিরাময়ের জন্যও ব্যবহার করা যায়। 

শরীরের কোনো কোনো অঙ্গে মাঝে মাঝে আলাদাভাবে বিশেষ কোনো যৌগিক পদার্থ যুক্ত হয়। সেই যৌগিক পদার্থের পরিমাণ দেখে অল্পটি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া সম্ভব। যৌগটির পরিমাণ বোঝার জন্য যৌগটির কোনো একটি পরমাণুকে তার একটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ দিয়ে পাল্টে দেওয়া হয় এবং সেই তেজস্ক্রিয় আইসোটোপটির বিকিরণ থেকে নির্দিষ্ট অঙ্গে যৌগের পরিমাপ বোঝা যার। সাধারণত আইসোটোপটি গামা রে বিকিরণ করে এবং বাইরে থেকেই এই গামা রে শান্ত করা মাত্র। 

তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহারের একটি চমকপ্রদ উদাহরণ PET বা Positron Ermission Tomography যেখানে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপটি পজিট্রন বিকিরণ করে। তোমরা জানো পজিট্রন ইলেকট্রনের প্রতি কনা (anti particle) এবং এটি ইলেকট্রনের সাথে যুক্ত হয়ে শক্তিতে রূপান্তর হয়। এই শক্তি দুটো পামা রে হিসেবে বিপরীত দিকে বের হয়ে আসে। কাজেই বিপরীত দিকে দুটি নির্দিষ্ট শক্তির গামা রে শনাক্ত করে পজিট্রনটি কোথা থেকে বের হয়েছে সেটি বের করে নেওয়া যায়। সেই তথ্য থেকে আমরা শুধু যে পজিট্রন তৈরির অস্তিত্ব জানতে পারি তা নয়, সেটি ঠিক কোথায় কতটুকু আছে সেটাও বলে দিতে পারি। গ্লুকোজের ভেতর পজিট্রন বিকিরণ করে সেরকম একটি আইসোটোপ যুক্ত করে দিলে PET ব্যবহার করে আমরা মস্তিষ্কের কোথায় কতটুকু গ্লুকোজ জমা হয়েছে সেটি বের করতে পারব। এই তথ্য থেকে কোন সময় মস্তিক্ষের কোন অংশ বেশি ক্রিয়াশীল এবং বেশি গ্লুকোজ ব্যবহার করেছে সেই তথ্যও বের করা সম্ভব। PET প্রযুক্তি মানুষের মস্তিক্ষের কর্মপদ্ধতি বের করার ব্যাপারে যুগাস্তকারী ভূমিকা রেখেছে। 

তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করে শুধু যে রোগ নির্ণয় বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কর্মপদ্ধতি বের করা হয় তা নয়, এটি দিয়ে রোগ নিরাময়ও করা হয়। কোবাল্ট-60  একটি গামা রে বিকিরণকারী আইসোটোপ, এই আইসটোপ ব্যবহার করে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষকে গামা রে দিয়ে ধ্বংস করা হয়। আয়োডিন-131 থাইরয়েডের চিকিৎসার ব্যবহার করা হয়, থাইরয়েডের চিকিৎসায় এটি এতই কার্যকর, যা আজকাল থাইরয়েডের সার্জারির সেরকম প্রয়োজন হয় না । 

এছাড়া লিউকেমিয়া নামে রক্তের ক্যান্সারের চিকিৎসায় তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ফসফরাস- 32 যুক্ত ফসফেট ব্যবহার করা হয়। 

common.content_added_and_updated_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion